Sunday, September 7, 2025
HomeUncategorizedইরানের খোরামশর ফাইভ: সরাসরি গিয়ে পড়বে ওয়াশিংটনে

ইরানের খোরামশর ফাইভ: সরাসরি গিয়ে পড়বে ওয়াশিংটনে

সম্প্রতি ইরানের এক নেতা হুমকি দিয়েছেন, এবার আর শুধু ইসরাইল নয়, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানতে পারে আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটনে। এই ঘোষণা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন আলোচনা ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি আগে মূলত আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা সীমাবদ্ধ ছিল। তবে বর্তমানে এটি বিশ্ব রাজনীতির মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হিসেবে রূপান্তরিত হচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়েছে খোরামশর ফাইভ। কিছুদিন আগে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও ছড়ায়, যেখানে একটি বিশাল ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপিত হচ্ছে। ভিডিওটি ২০২৩ সালের খোরামশর ফোরের হলেও, এর প্রযুক্তিগত সম্ভাবনা নিয়ে নতুন গুঞ্জন তৈরি হয়েছে।

সূত্র মতে, খোরামশর ফাইভ ইরানের প্রথম আইসিবিএম (ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল) হতে পারে। এর পাল্লা প্রায় ১২,০০০ কিলোমিটার, যা সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে পৌঁছাতে সক্ষম। গতিবেগ মার্ক ১৬, অর্থাৎ ঘণ্টায় প্রায় ২০,০০০ কিলোমিটার, যা হাইপারসোনিক অস্ত্রের উচ্চ প্রযুক্তির নির্দেশ দেয়।

২০১৫ সালে ইরান ঘোষণা করেছিল যে তারা ২০০০ কিলোমিটারের বেশি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করবে না। যুক্তি ছিল আঞ্চলিক হুমকি মোকাবেলায় যথেষ্ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আছে। কিন্তু বর্তমান ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা, আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব এবং আগ্রাসন ইরানকে পূর্ব প্রতিশ্রুতি পুনর্মূল্যায়ন করতে প্ররোচিত করছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের আইসিবিএম তৈরি করা শুধু রাজনৈতিক নয়, প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জও। মহাকাশে উৎক্ষেপণ, বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশ এবং লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল আঘাত—সবই মহাকর্ষ, তাপ ও গতির জটিল গণনার খেলা।

খোরামশর ফাইভ-এর ওয়ারহেড প্রায় দুই টন, যা অনেক দেশের পারমাণবিক বা বাংকার-বাচ্চা বোমার ক্ষমতার সমতুল্য। যদিও পুরো পাল্লা বহনযোগ্যতা এখনো নিশ্চিত নয়, কারণ পাল্লা বাড়লে লোড কমে যায়। ইরান ইতিমধ্যেই হাইপারসোনিক ফাত্তাহ ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে দেখিয়েছে যে তারা জটিল তাপ প্রতিরোধী উপাদান ও গাইডিং সিস্টেম তৈরি করতে সক্ষম।

এই মুহূর্তে খোরামশর ফাইভ সরাসরি সরকারি ঘোষণা নয়, বরং গুজব এবং প্রযুক্তিগত সম্ভাবনার ইঙ্গিত। জুন মাসে ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসির জাদে বলেছিলেন, তারা দুই টনের ওয়ারহেড সফলভাবে হাইপারসোনিক গতিতে পরীক্ষায় ব্যবহার করেছে, যা অনেকের কাছে খোরামশর ফাইভ-এর প্রাথমিক রূপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এই প্রযুক্তিগত উত্তরণ আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও কূটনীতি নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করছে, যেখানে ইরান শুধু আঞ্চলিক নয়, গ্লোবাল প্রতিরক্ষা মানচিত্রেও গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় পোষ্ট