যেদিন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়েছে, সেদিনই আমি বলেছি—সরকার আওয়ামী লীগের একটা বিরাট উপকার করল, বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ফরেইন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
সোমবার (৩০ জুন) একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে তিনি এই মন্তব্য করেন।
রুমিন ফারহানা বলেন, আজকে যদি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা না হতো, কথার কথা নৌকা মার্কায় যদি আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারত, তাহলে আমার প্রথম প্রশ্ন বা আমার বিশ্লেষণ হবে—আওয়ামী লীগ কিন্তু নির্বাচনে অংশ নিত না।
আওয়ামী লীগ নিজেই এই নির্বাচনে অংশ নিত না। কারণ, এই দলটি জানে তারা কী বিভৎস অন্যায় করেছে বাংলাদেশে—শুধু এই দেড় মাসে নয়। এর আগে ১৫ বছর ধরে তারা কী করেছে, সেটা তারা নিজেরাই জানে। অথচ এখন পর্যন্ত দলটি “সরি” বলেনি, এখন পর্যন্ত কোনো অনুশোচনা দেখায়নি—না “সরি”, না “রিমোর্স”। সুতরাং এই দলের মধ্যে কোনো আত্মচেতনাও নেই।
কিন্তু তারা এটা অবশ্যই জানে যে তারা যেসব কাজ করেছে, বাংলাদেশের মানুষ তাদের গ্রহণ করবে না। এবং এই নির্বাচনকে একতরফা নির্বাচনের তকমা দেওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো—নির্বাচন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া। কারণ এমনিতেই তারা জিতবে না। এমনিতেই তারা মাঠে নামলে মানুষ তাদের ভোট দেবে না। সুতরাং, নির্বাচনে না যাওয়াটা তাদের জন্যই ভালো, আর সরকার একপ্রকার তাদের উপকারই করল।
সরকার তো ফেভারই করল—একদম তাই। একদমই। এক্স্যাক্টলি যেদিন নিষিদ্ধ হয়েছে, সেদিনই আমি বলেছি, সরকার আওয়ামী লীগের বিরাট উপকার করল।
যেমনভাবে ৩২ নম্বর বাড়ি ভেঙে সরকার আওয়ামী লীগকে অনেক মাইনেজ দিয়েছিল—তেমনি এবারও। শুধু দেশের মাটিতে না, আন্তর্জাতিক মহলেও সরকার আওয়ামী লীগকে একটা বড় মাইনেজ দিয়ে ফেলল।
এই সিদ্ধান্তগুলো একটা “নন-পলিটিক্যাল গভর্নমেন্ট” হলে যা হওয়ার কথা, ঠিক তাই হয়েছে। আবার ধরেন, তারা যদি মনে করত—স্বতন্ত্র প্রার্থী দেবে আওয়ামী লীগ, সেটাও তারা দিতে পারত। এখন সেই সুযোগ তো আছে। আওয়ামী লীগ চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী দিতে পারে, অন্য দলে গিয়েও প্রার্থী হতে পারে।
অন্য দল বাদই দিলাম, স্বতন্ত্রই ধরেন—এলাকার মানুষ তো জানে কে কোন দল করে, কে কোন মার্কার পক্ষে আছে। তাহলে কি আপনি মনে করেন—স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার মতো সাহসিকতাও তাদের নেই?
মানুষ তো ব্যক্তিগুলোকে চিনে। ওই পথে গেলেও কিন্তু আওয়ামী লীগ যেত না। এখন যেটা হলো, সেটা হলো—আওয়ামী লীগকে আরও বেশি মাইনেজ দেওয়া হলো। দলটিকে নিষিদ্ধ করে সরকার তাদের কার্যত রক্ষা করল।
এর মানে—দুইদিকই কভার হলো। যারা নিষিদ্ধ চায়, তারা খুশি; আবার আওয়ামী লীগও খুশি