সিবিএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন এক উচ্চপর্যায়ের গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, ট্রাম্প চান ইরান তাদের পারমাণবিক কার্যক্রম স্বেচ্ছায় বন্ধ করুক। তবুও, গোপন পারমাণবিক স্থাপনা, বিশেষ করে ফর্দো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে হামলার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ট্রাম্পের “নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ” দাবিকে তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, “ইরান কখনো মাথা নত করবে না। কোনো আগ্রাসনের চরম মূল্য দিতে হবে।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমি এটি করতে পারি, আবার না-ও করতে পারি।” একইসঙ্গে তিনি জানান, তাঁর ধৈর্যের সীমা প্রায় ফুরিয়ে এসেছে।
এদিকে ইসরায়েল সম্প্রতি ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যার লক্ষ্য ছিল পারমাণবিক ও সামরিক অবকাঠামো। জবাবে ইরান হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে ইসরায়েল ক্ষয়ক্ষতি অস্বীকার করেছে।
ঘটনার জেরে তেহরানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শহর ছাড়তে সড়কে নেমে পড়েছে লাখো মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট নির্দেশ দিলে সেনাবাহিনী হামলার জন্য প্রস্তুত।
প্রতিরক্ষা সূত্র আরও জানায়, মার্কিন বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস নিমিৎস ও কার্ল ভিনসনসহ এফ–২২ এবং এফ–৩৫ যুদ্ধবিমান মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন করা হচ্ছে। এতে স্পষ্ট, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে।
জাতিসংঘে ইরানের প্রতিনিধি ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে বলেছেন, “ইরান আলোচনায় বসে, তবে জবরদস্তিমূলক শান্তি নয়। আর যুদ্ধবাজ নেতার সঙ্গে নয়, যে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে মরিয়া।”
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, “আমরা ধাপে ধাপে তেহরানের পারমাণবিক হুমকি নির্মূল করছি।” তিনি দাবি করেন, ইরানের সামরিক ও রাজনৈতিক প্রতীকগুলো তাদের হামলার লক্ষ্যে রয়েছে।
এই উত্তেজনার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র তাদের জেরুজালেম দূতাবাস থেকে নাগরিক সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। একইসঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আসন্ন বৈঠকে ইরান ইস্যু মূল আলোচ্য বিষয় হবে বলে জানা গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্য এখন নতুন এক সংঘাতের মুখোমুখি। আর এই সংকটের কেন্দ্রে রয়েছেন ট্রাম্প—যিনি সিদ্ধান্ত নেবেন, যুদ্ধ হবে কি হবে না।